নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী দাবি করেছেন, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে হেফাজতের ব্যানারে সংগঠিত হামলার মূল নেতৃত্বে ছিলেন খালেদা জিয়া, তারেক রহমান এবং মির্জা ফখরুলরা। তাদের নেতৃত্বেই সেদিন (চলতি বছরের ২৬ মার্চ) দেশের বিভিন্ন জায়গায় হত্যা, অগ্নিসংযোগ ও সহিংসতা হয়েছে।
শনিবার (১ মে) দিনাজপুর জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ পরিচালনা কমিটির উদ্যোগে করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত ও কর্মহীনদের মাঝে খাদ্য সহায়তা বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
নৌ প্রতিমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তির দিনে জামায়াত-বিএনপি, হেফাজতের নামে বাংলাদেশের জনগণের ওপর আক্রমণ করেছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নারায়ণগঞ্জ, ঢাকা ও চট্টগ্রামে মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে। সরকারি সম্পদ ভাংচুর করেছে। সমগ্র পৃথিবীতে আমরা যে সম্মানের জায়গায় গেছি, সেই সম্মানের হানি করার চেষ্টা করা হয়েছে। এর নেতৃত্ব দিয়েছে খালেদা, তারেক আর মির্জা ফখরুল ইসলাম।
তিনি আরও বলেন, তারা সমগ্র বাংলাদেশকে জানিয়ে দিয়েছে, একাত্তরে পাকিস্তানি হানাদাররা যেভাবে অগ্নিসংযোগ, লুটপাট করেছে, মা বোনদের ধর্ষণ করেছে, তারই পুনরাবৃত্তি তারা চালিয়েছে ২০২১ সালের ২৬ মার্চ।
খালিদ মাহমুদ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে করোনার প্রথম ঢেউ আমরা সফলভাবে মোকাবিলা করেছি। দ্বিতীয় ঢেউয়ের শুরুতে ১৭ মার্চ থেকে ২৬ মার্চ ঐতিহাসিক ১০ দিন স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষ উপলক্ষে বাংলাদেশে এক ঐতিহাসিক আয়োজন ছিল। তাবৎ দুনিয়ার সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানরা বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। দেশে যখন এত বড় আয়োজন চলছে, মানুষ যখন করোনা থেকে মুক্তির জন্য হাসপাতাল থেকে হাসপাতালে ছুটছেন, সেই সময় মানবতার পাশে আওয়ামী লীগ ছাড়া কেউ ছিল না। তখন বিএনপি-জামায়াত হেফাজতের নামে হত্যা ও ধ্বংসলীলায় মেতে ওঠে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের রাজনীতি করে না। আওয়ামী লীগ রাজনীতি করে মানবতা নিয়ে। ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে মাতৃস্নেহে আশ্রয় দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। করোনায় কর্মহীন অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
খালিদ বলেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আর্তমানবতার সেবায় গত ৫০ বছর ধরে কাজ করে যাচ্ছে। আমাদের ওপর অনেক নির্যাতন হয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হয়েছে। জেলখানায় জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হয়েছে। আমাদের এই মিছিল থেকে অনেক মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। নির্যাতন করা হয়েছে। ফ্রিডম পার্টি দিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে। আওয়ামী লীগকে বিভক্ত করে শেখ হাসিনার হাতকে দুর্বল করা হয়েছে। আওয়ামী লীগকে খাটো করার জন্য দিনাজপুরে দলের শোক মিছিলে গুলি করা হয়েছে। কিন্তু আওয়ামী লীগের এ সংগ্রামী অভিযাত্রা কখনো থেমে থাকে নাই। আওয়ামী লীগ আর্তমানবতার কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে। সে পদযাত্রায় আমরা হাঁটছি।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও ত্রাণ পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক আলতাফুজ্জামান মিতা, বজলুল হক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ত্রাণ পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব ফারুকুজ্জামান চৌধুরী মাইকেল, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ রফিকুল ইসলাম, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক কামরুল হুদা হেলাল, যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক তৈয়বুদ্দিন চৌধুরী, বন ও পরিবেশ সম্পাদক তরিকুল ইসলাম, দপ্তর সম্পাদক সেলিম আক্তার চৌধুরী, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. করিম, দিনাজপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে তিন শতাধিক কর্মহীন ও অসহায়ের মাঝে নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়।
এদিন সকালে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বোচাগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ ও মতবিনিময় সভায় অংশ নেন। বিকেলে বিরল উপজেলা মঙ্গলপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ের উদ্বোধন করেন তিনি।